প্রথম অস্ত্রোপচারের জনক ঋষি সুশ্রুত | সুশ্রুত সংহিতা
১ম পর্ব
এনাটমি অথবা অস্ত্রোপচারের কথা বললেই লিওনার্দ দ্য ভিঞ্চির নামটা সবার আগে চলে আসে।
সেই কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজে তার সাহসিকতা কিংবদন্তি হয়ে আছে।
কিন্তু এরও বহু আগে ভারতের চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচারে দারুণ কিছু কাজ করে গেছেন। যাদের অনেকেরই নাম আমরা হয়ত জানি না।
এমন একটি নাম ঋষি সুশ্রুত। তাঁকে সারা পৃথিবী জানে প্লাস্টিক সার্জারির জনক হিসেবে। তিনি ভারতীয় চিকিৎসা বিজ্ঞানেরও জনক।
জানতে হলে আমাদের নজর দিতে হবে আরো ২৬০০ বছর পূর্বে।
তার আগে ছোট একটা ঘটনা উল্লেখ করছি,
১৭৯৩ সালের দিকের কথা বলছি, ডাক্তার স্কট নামের একজন চিকিৎসক ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ক্যাপ্টেন আরভাইনের কাছ থেকে এক অদ্ভুত গল্প শুনলেন।
তখন চৌর্যবৃত্তিসহ বিভিন্ন অপরাধের শাস্তি হিসেবে অপরাধীদের নাক কেটে দেওয়া খুব প্রচলিত সাজা ছিলো। ফলে ভুক্তভোগীকে আজীবন এই লজ্জা বয়ে নিয়ে বেড়াতে হতো।
কিন্তু ক্যাপ্টেন আরভাইন জানালেন, পুনের ‘কুমার’ সম্প্রদায়ের ভেতর এমন কিছু মানুষ আছে যারা নিখুঁতভাবে কাটা নাক সারিয়ে দিতে পারে।
তবে তাদের নিজেদের উদ্ভাবন নয় এই অস্ত্রোপচার। বহু বছর ধরে বংশপরম্পরায় অর্জন করেছে এই জ্ঞান।
কবে কে উদ্ভাবন করেছিলো এই পদ্ধতি, তারা নিজেরাও জানে না!
এমন গল্প শুনে অবিশ্বাসে ভ্রু কুঁচকে ফেললেন ডাক্তার স্কট।
কাটা নাক সারিয়ে ফেলা মানে? এটা কীভাবে সম্ভব!
ডাক্তার স্কট সরেজমিনে তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিলেন। কিন্তু তার পক্ষে নিজে উপস্থিত হওয়া সম্ভব ছিলো না।
অগত্যা তিনি পুনেতে কর্মরত সার্জন ডাক্তার ফিনলে এবং ডাক্তার ক্রুসো নামক দুজনের উপর দায়িত্ব দিলেন, তারা যেন এ ব্যাপারে তদন্ত করে একটি রিপোর্ট জমা দেয়।
অনেক অপেক্ষার পর সুযোগ মিলল। দুজন ডাক্তার সরেজমিনে কাহিনীর সত্যতা যাচাই করতে গেলেন।
তাদের বিস্মিত চোখের সামনে ‘কুমার’ সম্প্রদায়ের কিছু নিরক্ষর মানুষ নিখুঁতভাবে তাদের কাজ সমাধা করে ফেললো!
তারা হাতে তৈরি একটি ধারালো ক্ষুর দিয়ে প্রয়োজনীয় মাপের চামড়া রোগীর কপাল থেকে কেটে নিলো।
তারপর তা স্থানীয়ভাবে প্রস্তুতকৃত একধরনের আঠা জাতীয় পদার্থের সাহায্যে জুড়ে দিলো ক্ষতস্থানে নিখুঁতভাবে!
সমগ্র প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়ে গেলো অতি দ্রুততার সাথে। ডাক্তার দুজন রোগীটিকে কয়েকদিন পর্যবেক্ষণে রাখলেন।
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই ‘গ্রাফট টিস্যু’ জোড়া লেগে গেলো সঠিকভাবে! শুধুমাত্র হালকা একটি কাটা দাগ থেকে গেলো, সেখানে যে কোনো অপারেশন হয়েছিলো তার সাক্ষ্য দিতে।
১৭৯৪ সালের পয়লা জানুয়ারিতে ডাক্তার ক্রসো এবং ফিনলের পাঠানো রিপোর্টটি ঐ বছরেই লন্ডনের ‘জেন্টলম্যানস ম্যাগাজিন’ এ ছাপা হয়।
সেটি আবার নজরে পড়ে ডাক্তার জে সি কাপ্রুর। তিনি অপারেশনের উপর বিস্তারিত বিবরণ সংগ্রহ করে নিজে সেটি পরীক্ষা করে দেখেন!
বলা বাহুল্য, সে অপারশন সফলতার মুখ দেখেছিলো। ১৮১৬ সালে প্রকাশিত ‘An account of two successful operations for restoring a lost nose from the integuments of the forehead’ বইতে তুলে ধরেন এই কাহিনী।
ফলে সারা বিশ্ব জানতে পারে এক হারানো জ্ঞানের কথা, যা লুকিয়ে ছিলো কিছু নিরক্ষর গ্রাম্য মানুষের মাঝে।
you may also like….
ইতিহাসবিদ দের আর একটি ঘটনা উল্লেখ করি,
১৭৯০-৯২ খ্রিস্টাব্দে টিপু সুলতান এবং ব্রিটিশদের মধ্যে তৃতীয় মহীশূর যুদ্ধ হয়েছিল।
যুদ্ধের সময় মহীশূর সৈন্যরা একটা পণ্যবাহী গাড়ী আটক করে যা ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর জন্য খাবার নিয়ে যাচ্ছিল।
এই ট্রাকটি চালাচ্ছিলেন কোসাজি (মতান্তরে কাওয়াসজি) নামের এক সাধারণ মারাঠি।
টিপু সুলতান ধৃত কোসাজীর নাক কেটে দেওয়ার নির্দেশ দিলেন। যথাসময়ে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর কোসাজি মুক্তি পান।
তখন একজন ব্রিটিশ ডাক্তার তাঁর চিকিৎসার জন্য এগিয়ে আসেন। কিন্তু কোসাজি সেই চিকিৎসককে তার চিকিৎসা করতে দেননি।
বরং তিনি বলেন যে ‘কুমার’ নামে এক প্রাচীন দেশীয় চিকিৎসকের কাছে তাকে নিয়ে যেতে!
আধুনিক ওষুধের পরিবর্তে স্থানীয় প্রতিকার বেছে নেওয়ার জন্য ইংরেজরা তাকে নিয়ে তখন হাসাহাসি করেছিল।
কিন্তু কোসাজি নিজের সিদ্ধান্তে অটল। তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস, “কুমার আবার আমার কাটা নাক ঠিক করে দেবেন।”
সকলেই তাঁকে বিদ্রুপ করা শুরু করে।
তবে অবশেষে তাঁকে কুমারের কাছে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
কুমার কোসাজীর কপাল থেকে চামড়া তুলে নিয়ে তাঁর নাকের জায়গায় প্রতিস্থাপন করেন।
ধীরে ধীরে তাঁর নাক আবার আগের চেহারা ফিরে পায় এবং কপালের চামড়াও ফিরে আসে।
এই “অলৌকিক ঘটনা” দেখে সেই ব্রিটিশ চিকিৎসক এই ঘটনার বিস্তারিত প্রতিবেদন তৈরী করে ব্রিটেনে পাঠান।
তাঁর পাঠানো প্রতিবেদন দেখে Joseph Constantine Carpue নামের একজন ইংরেজ চিকিৎসক লন্ডন থেকে এসে কুমারের সাথে দেখা করেন।
তিনি বেশ কয়েক বছর ভারতে থেকে এই অস্ত্রোপচার পদ্ধতি শিখে ইংল্যান্ড ফিরে যান।
এরপর 1816 সালে তিনি বিশ্বের প্রথম “প্লাস্টিক সার্জারি” করেন। এটি তখন “কার্পিউ অপারেশন” হিসাবে পরিচিত হয়।
এই জটিল ও নিখুঁত অস্ত্রোপচার পদ্ধতি পুনের কুমার সম্প্রদায়ের মানুষ কীভাবে অর্জন করলো, তা জানতে হলে আমাদের পিছিয়ে যেতে হবে আরো অন্তত ২৬০০ বছর পূর্বে।
এই মহামূল্যবান গ্রন্থের রচনা কাল প্রায় তিন সহস্র বছরের কাছাকাছি।
উৎপত্তি সময় নিয়ে কিঞ্চিৎ মতবিরোধ থাকলেও ঐতিহাসিকগণ এই বিষয়ে একমত যে, সংস্কৃত ভাষায় রচিত এই গ্রন্থখানি ২৬০০ বছরের ও আগের।
খুব রক্ষনশীল দৃষ্টিকোণ থেকেও যদি বিচার করা হয়, আজ থেকে প্রায় ২৬০০ হতে ২৭০০ বছর পূর্বে এটি রচিত।
এই সময়ে সংকলিত হয় একটি বিখ্যাত চিকিৎসা বিষয়ক গ্রন্থ সুশ্রুত সংহিতা।
সুশ্রুত সংহিতা পিডিএফ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
এটা ঐতিহাসিকভাবে সত্য যে মানবসভ্যতার চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে প্রথম Plastic Surgery এবং চক্ষুরোগে শল্যচিকিৎসার ব্যাবহার প্রাচীন ভারতের এক জ্ঞান তপস্বী ঋষির অবদান
এর আগে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে এমন পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ রচিত হয়নি।
গ্রন্থটি রচনা করেন চিকিৎসক, দার্শনিক ও একজন মহান মুনি মহর্ষি সুশ্রুত।
এই মহা মূল্যবান গ্রন্থের রচয়িতা ঋষি সুশ্রুত, আদি ভারতের একজন চিকিৎসক এবং গবেষক, যাঁর সমগ্র জীবনকাল ব্যায় করেছেন মানবকল্যানে, মানুষের রোগমুক্তির নিরন্তর ভাবনা ও উদ্ভাবনে।
কালের স্রোতে কখনও কচিৎ কতিপয় গুণীজনেরা এই প্রাচীন রচনাটির গভীরে প্রবেশ করেছেন, ভিন্ন ভিন্ন ভাষায় অনুবাদে সচেষ্ট হয়েছেন কিন্তু সাধারন নাগরিক জীবনে তার রেখেপাত বিশেষ ঘটেনি।
সুশ্রুত যে দেশমাতৃকায় সেবায় জীবনপার করেছিলেন, সেই দেশেই যেখানে জনমানসে তাঁর কীর্তির প্রতি যথেষ্ট অজ্ঞানতা, কি এমন ঘটল?
সাগরপারের প্রথম বিশ্বের একটি দেশ অষ্ট্রেলিয়া তাদের একটি বিশ্বখ্যাত চিকিৎসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান Royal Australasian College of Surgeons, (Melbourne) এ এই ঋষির উপবেশনরত একটি মূর্তি সশ্রদ্ধায় প্রতিষ্ঠা করলেন!
এর কারন, জ্ঞানতপস্বী ঋষি সুশ্রুত রচিত “সুশ্রুত সংহিতা” পাশ্চাত্য চিকিৎসক ও চিকিৎসাবিজ্ঞানের গবেষকগণকে বিস্মিত করেছে!
বিবিধ আধুনিক শল্যচিকিৎসার পদ্ধতি, যা এযাবৎকাল পর্যন্ত মনে করা হতো মাত্র কয়েক শতাব্দী প্রাচীন, গ্রন্থটিতে তা বর্ণিত করা আছে সুস্পষ্টভাবে কয়েক সহস্রাব্দপূর্বে,
যা চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসকে নতুনভাবে লিখতে বাধ্য করছে।
পশ্চিমী দুনিয়ার চিকিৎসাবিজ্ঞানের সাথে জড়িত বিশিষ্টগণ ব্রতী হয়েছেন তাঁদের গবেষণাপত্রে আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্রে ঋষি সুশ্রুতের অবদান তুলে ধরতে।
মহর্ষি সুশ্রুতের জন্মকাল নিয়ে ঐতিহাসিকদের ভেতরে যথেষ্ট মতভেদ রয়েছে।
ভারতের হরিদ্বারের ‘পতঞ্জলি যোগপীঠ’ এ মহর্ষি সুশ্রুতের একটি আবক্ষ মূর্তি রয়েছে।
মহর্ষি সুশ্রত এর জীবনবৃত্তান্ত :
সেখানে তার জীবনকাল হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে খ্রিষ্টপূর্ব ১৫০০ অব্দে তিনি জীবিত ছিলেন।
তবে অধিকাংশ ঐতিহাসিকের মতে তার জীবনকাল অতিবাহিত হয়েছিলো খ্রিষ্টপূর্ব ১০০০ সাল থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ৬০০ সালের মধ্যে।
টাকলামাকান মরুভূমির প্রাচীন এক বৌদ্ধবিহার থেকে পাওয়া গুপ্ত যুগের ব্রাহ্মী লিপিতে উল্লেখ পাওয়া যায় মহর্ষি সুশ্রুতের।
ব্রাহ্মী লিপিতে লেখা এই পান্ডুলিপিতে তাকে হিমালয়ে বসবাসরত দশজন মহান ঋষির একজন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
কিছু ইতিহাসবিদদের মতে,ঋষি বিশ্বামিত্রের পুত্র ছিলেন সুশ্রুত।
তবে পন্ডিতদের একটি অংশের মতে,
রামায়নের বিখ্যাত মুনী বিশ্বামিত্র।
যিনি রচনা করেছেন মহামন্ত্র গায়ত্রী।
তার পুত্র হচ্ছেন সুশ্রুত।
দেবতারা ঔষধি জ্ঞান বিতরণ করেন দেবর্ষি ধন্বন্তরীকে। ধন্বন্তরী হচ্ছেন আয়ুর্বেদ চিকিৎসার পথ প্রদর্শক।
ধন্বন্তরী সেই জ্ঞান বিতরণ করেন তার পৌত্র দিবদাসকে। দিবদাস এই জ্ঞান বিতরণ করেন সুশ্রুতকে। সুশ্রুত ছিলেন তার যোগ্যতম শিষ্য।
অনেকের মতে, ধন্বন্তরীর (ধন্বন্তরী ছিলেন কাশী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক) কাছেই সুশ্রুতের শিক্ষা। ছোটবেলা থেকেই রোগ নিরাময়ের বিষয়ে বিশেষ পারদর্শী ছিলেন তিনি।
সুশ্রুত বিশ্বাস করতেন, একজন ভালো চিকিৎসক হতে হলে অবশ্যই একজন ছাত্রের মেডিসিন আর সার্জারি উভয় বিষয়ে জ্ঞান থাকতে হবে।
তা না হলে সে হয়ে যাবে এমন একটি পাখির মতো যার কেবল একটি ডানা।
গঙ্গা নদীর তীরে গড়ে ওঠা প্রাচীন নগরী বেনারসে ধর্ম ও জ্ঞানের অপূর্ব সম্মেলন ঘটেছে।
প্রাচীনকাল থেকে এটি বৈষ্ণবদের অতি পবিত্র স্থান হিসেবে বিখ্যাত।
পরবর্তীতে এই নগরী হয়ে উঠেছিলো বৌদ্ধ ধর্ম এবং আয়ুর্বেদের পীঠস্থান।
মহর্ষি সুশ্রুত বেড়ে উঠেছিলেন এই প্রাচীন বেনারস শহরে। সেখানেই বিকশিত হয়েছিলো তার প্রতিভা।
গঙ্গার ধারে মনরোম পরিবেশে এক আশ্রম। গাছগাছালি ঘেরা।
তার এই আশ্রম মূলতঃ চারভাগে ভাগ করা। একাধারে তার পরিবার আর শিষ্যরা থাকেন।
আরেকদিকে হাসপাতাল। আর গঙ্গার তীর ঘেঁষে রয়েছে তার পরীক্ষাগার। আধুনিক যুগে যাকে বলা হয় ল্যাবরেটরি।
আশ্রমের একটি অংশ জুড়ে চলছে চাষ।
সেখানে বেশিরভাগ অংশ জুড়ে নানারকম ঔষধি গাছের চাষ হয়ে রয়েছে। সেই লতা গুল্মগুলির পরিচিতি শেখান হয়।
পাশাপাশি সেগুলো থেকে কিভাবে ওষুধ তৈরি হয় সেই নিয়ে চলে শিক্ষা।
চিকিৎসার পাশাপাশি তিনি এখানে তার ছাত্রদের শিক্ষা দিতেন।
তার অনুসারীদের বলা হতো সৌশ্রুত। সমস্ত সৌশ্রুতকে ছয় বছর ধরে শিক্ষা গ্রহণ করতে হতো।
শিক্ষাগ্রহণ সম্পন্ন হওয়ার পরে তাদের একটি শপথ নিতে হতো। আধুনিক যুগে আমরা যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের জনক হিসেবে জানি, সেই হিপোক্রেটিসের জন্মেরও আগের ঘটনা এটি।
নিজের সময় থেকে অনেক অগ্রসর ছিলেন এই মহান চিকিৎসক। তার প্রজ্ঞার পরিচয় পাওয়া যায় তার রচিত গ্রন্থে।
এই গ্রন্থে রচিত বহু বিষয় আজও প্রাসঙ্গিক। সুশ্রুত মূলত শল্যচিকিৎসায় বিশেষ পারদর্শী ছিলেন।
তবে মেডিসিনেও তার অগাধ ব্যুৎপত্তি ছিলো। তিনি মনে করতেন, পরিপূর্ণ চিকিৎসক হতে গেলে শল্যবিদ্যার পাশাপাশি মেডিসিনের জ্ঞানও আবশ্যক।
সুশ্রুত সংহিতায় তিনি শল্যচিকিৎসার পদ্ধতির পাশাপাশি প্রসূতিবিদ্যার নানাবিধ সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছেন।
মৃত মানুষের অঙ্গ ব্যবচ্ছেদের মাধ্যমে মানবদেহের খুটিনাটি জ্ঞান আহরণের প্রয়োজনীয়তা তিনি তুলে ধরেন এতে।
মৃতদেহ জলে ডুবিয়ে রেখে পর্বে পর্বে তার পচন ও ক্ষয় পর্যবেক্ষণের পরামর্শ দিতেন।
সার্জারির সংস্কৃত প্রতিশব্দ শল্যচিকিৎসা। ‘শল্য’ শব্দটির অর্থ তীর। সেই সময়ে অধিকাংশ আঘাতের কারণ ছিলো যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পাওয়া তীরের আঘাত।
সেখান থেকেই এই নামের অবতারণা।
খ্রিষ্টপূর্ব ৮০০ অব্দে ভারতবর্ষে শল্যচিকিৎসার বিস্ময়কর উন্নতি হয়।
সাধারণ কাটাছেঁড়া তো স্বাভাবিক ব্যাপার ছিলো, ভারতীয় শল্যচিকিৎসকবিদগণ নাকের অস্ত্রোপচার (বর্তমানে আমরা পরিচিত Rhinoplasty নামে) এবং ছানি অপারেশন (ক্যাটার্যাক্ট অপারেশন) এ সিদ্ধহস্ত ছিলেন।
1971 genocide: How Yahya’s demonetization robbed Hindus
আর এ কাজে কিংবদন্তিসম দক্ষতা অর্জন করেছিলেন মহর্ষি সুশ্রুত। বলা হয়ে থাকে, তিনিই উদ্ভাবন করেছিলেন এই পদ্ধতি।
তবে নিঃসন্দেহে সুশ্রুতের সবচেয়ে বড় অবদান সুশ্রুত সংহিতা। নিজ মেধার গুণে তিনি প্রণয়ন করেছিলেন এই মহাগ্রন্থ।
ফলে প্রাচীন ভারতের সময়ের চেয়ে এগিয়ে থাকা এক আশ্চর্য জ্ঞান ভাণ্ডারের খোঁজ পাই আমরা।
আজ থেকে তিন হাজার কিংবা আরো পূর্বে প্রচলিত বিস্ময়কর চিকিৎসাপদ্ধতির বিবরণ আমাদের হতবাক করে দেয়।
প্রাচীন আর্যাবর্তের চিকিৎসাবিজ্ঞান:
‘সুশ্রুত সংহিতা’ দুটি মূল অংশে বিভক্ত। প্রথম পাঁচটি অধ্যায় নিয়ে গঠিত হয়েছে ‘পূর্বতন্ত্র’ এবং পরের অংশটি ‘উত্তরতন্ত্র’।
ছয়টি কাণ্ডে বিভক্ত ১৮৬ টি অধ্যায়ে রচিত এই মহাগ্রন্থ। এতে প্রায় ১,১২০টি মেডিকেল কন্ডিশন বা অসুস্থতার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে শারীরিক আঘাতের ফলে হওয়া বৈকল্য, বয়স বাড়ার ফলে সৃষ্ট অসুস্থতা, প্রসূতিদের সাথে সম্পর্কিত নানাবিধ রোগ, এমনকি মানসিক রোগের বিভিন্ন দিক এবং তার প্রতিকার।
পাশাপাশি রয়েছে ৭০০টি ওষধি গাছের বর্ণনা এবং তাদের ব্যবহার। খনিজ পদার্থজাত ৬৪টি এবং প্রাণীজ উৎসজাত ৫৭টি ওষধি দ্রব্যের বর্ণনা পাওয়া যায় তার গ্রন্থে।
তিনি তার গ্রন্থের বড় অংশ রেখেছেন শল্যচিকিৎসা বা সার্জারির জন্য।
তিনি অস্ত্রোপচারের পদ্ধতিকে কয়েকটি ধাপে ভাগ করেন। এগুলো হচ্ছে,
ছেদন (excision) কেটে বাদ দেওয়া। যেমন মারাত্মক ক্ষত হয়ে যাওয়া আঙুল বা নিরাময়ের অযোগ্য পা।
লেখন (sacrification) কোনো একটি অংশকে দাগ কেটে আলতোভাবে চিরে ফেলা কিংবা কোনো ক্ষতের বাড়তি মাংস বা ময়লা ছেঁচে তুলে ফেলা।
ভেদন (puncturing) কোনো অঙ্গে বিশেষ যন্ত্র দিয়ে ছিদ্র করে পেটের গহ্বর বা অণ্ডকোষে কিংবা মাংসপেশির মাঝে জমা হওয়া অস্বাভাবিক তরল বের করা।
এষণা (exploration) আপাতদৃষ্টিতে দেখা যায় না, এমন সব জায়গা যেমন- দেহ গহ্বর কিংবা অসুখের ফলে সৃষ্ট সাইনাস সমূহ উন্মুক্ত করে পর্যবেক্ষণ করা।
আর্য্যন (extraction) উৎপাটন বা শরীরে ঢুকে যাওয়া কোন বস্তু (যেমন তীর/ধাতব কোন বস্তর অংশ) টেনে বের করা।
সিবন(suturing) অস্ত্রোপচারের পর উন্মুক্ত স্থান সেলাই করে দেওয়া।
আধুনিক চিকিৎসাবিদ্যায় ঠিক এই কাজগুলোই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে করা হয়।
পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে, নাকের অস্ত্রোপচার যা এখন রাইনোপ্লাস্টি নামে পরিচিত, তখনকার সময় থেকেই চলে আসছে।
এখানেই শেষ নয়। বিশ্বাস করতে কষ্ট হলেও সত্যি যে, সুশ্রুত সংহিতার ১৬ অধায়ে অটোপ্লাস্টি এবং ল্যারিংগোপ্লাস্টি এর মতো অপারেশনের বর্ণনা পাওয়া যায়।
প্রথম অস্ত্রোপচারের জনক ঋষি সুশ্রুতের অস্ত্রোপচারের যন্ত্রপাতি:
অস্ত্রোপচার করার জন্য ১২১টি বিভিন্ন যন্ত্রপাতির উল্লেখ রয়েছে সুশ্রত সংহিতায়। যন্ত্রগুলিকে সুশ্রুত দুভাগে ভাগ করেছিলেন।
যেগুলো ভোঁতা, নাম দিলেন যন্ত্র। আর যেগুলো সরু ও ধারালো, তার নাম দিলেন শস্ত্র। যন্ত্র ছিল ১০১ রকম।
শস্ত্র ছিল বাকি ২০ রকম। কামারের কাছ থেকে কীভাবে এই যন্ত্রগুলো তৈরি করা যাবে, তারও নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
তার ব্যবহৃত কয়েকটি যন্ত্রের নাম মণ্ডলাগ্র সূচিকা, কুশপত্র, উৎপল পত্র, শবরিমুখ কাঁচি, অন্তর্মুখ কাঁচি ইত্যাদি।
জীবাণুমুক্তকরণের উপর ও তার নজর ছিলো।
ব্যবহারের আগে যন্ত্রগুলি জলে ফুটিয়ে জীবাণুমুক্ত করা হত।
অস্ত্রোপচারের সময় ব্যথানাশক হিসেবে রোগীকে তিনি আঙুর থেকে তৈরি বিশেষ তরল পানীয় পান করতে দিতেন এবং ক্যানাবিস জাতীয় হিপ্নোটিক ড্রাগের ধোঁয়া শোঁকাতেন।
ফলে রোগী অনেক কম যন্ত্রণা ভোগ করতো। ভাবতে অবাক লাগে, আজ থেকে কয়েক হাজার বছর পূর্বে একজন মানুষ তাঁর চিন্তাধারায় এতটা অগ্রগতি লাভ করেছিলেন।
সুশ্রুত সংহিতার বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ:
মহর্ষি সুশ্রুত ও তার সুশ্রুত সংহিতা এতই বিখ্যাত ছিলো যে এটি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা হয়।
বইটির খ্যাতি এতই প্রভাব বিস্তার করেছিল যে ৭৫০ খ্রিস্টাব্দের কাছাকাছি সময়ে খলিফা আব্বাসীর সময়ে বইটিকে আরবি ও ফারসি ভাষায় অনুবাদ করা হয়।
‘কিতাব-ই-সুশ্রুত’ ( কিতাব-সুশ্রুদ-এ-হিন্দ ) নামে আরবিতে অনুবাদ হয়।
৮ম শতকে ইরাকের বাগদাদের চিকিৎসাকেন্দ্রসমূহে ব্যবহারের জন্য বইটি তাদের ভাষায় অনুবাদ করা হয়।
৯ম শতকে বইটি ইউরোপে প্রথম ইতালিতে এরপর সারা ইউরোপে ছড়িয়ে পরে।
প্রথম ইউরোপিয়ান হিসেবে বইটির ল্যাটিন অনুবাদ করেন হেসলার এবং জার্মান অনুবাদ করেন মুলার।
পশ্চিমের দিকে এই বই প্রচারিত হতে থাকে কম্বোডিয়া সহ বেশ কয়েকটি দেশেও এই বই প্রচারিত হয়৷
ইতালিতে যে রাইনোপ্লাস্টি চালু হয়েছিলো, ধারণা করা হয়, তারা সুশ্রুত সংহিতা থেকে প্রভাবিত ছিলো।
১৮৩৫ সালে কলকাতায় মধুসূদন দত্ত কর্তৃক ‘এডিটিও প্রিন্সেপ্স’ নামে সংস্করণ বের হয়।
কবিরাজ কুঞ্জলাল ভিষকরত্ন ১৯০৭ সাল থেকে ১৯১৬ সালের ভেতরে তিন খণ্ডে সুশ্রুত সংহিতার সম্পূর্ণ ইংরেজি সংস্করণ প্রকাশ করেন।
প্রাচীন এ গ্রন্থের ঐতিহাসিক মূল্য ও গুরুত্ব বিবেচনায় এনে ২০১৩ সালে ইউনেস্কো একে বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত করে।
প্রাচীন ভারতে সুশ্রুত পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সাথে সাথে আর্থ সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন হয়। মৃতদেহ নিয়ে গবেষণা বা কাটাছেঁড়া নিষিদ্ধ করা হয়।
ফলে ধীরে ধীরে শল্যবিদদের দক্ষতা হ্রাস পেতে থাকে। জাতিভেদ প্রথাসহ সামাজিক শ্রেণিবিভাগ হওয়ার পর উঁচু শ্রেণির মানুষেরা ‘শল্যবিদ’ ব্যাপারকে তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে দেখতে থাকে।
ধীরে ধীরে এই জ্ঞান হারিয়ে যায় আমাদের কাছ থেকে।
হয়ত আমরা কখনোই জানতে পারতাম না আমাদের অতীতের এই গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়কে, যদি না মহর্ষি সুশ্রুত আমাদের জন্য রেখে যেতেন তার অমর গ্রন্থ ‘সুশ্রুত সংহিতা’।
এই গ্রন্থের মূল আলোচ্য বিষয় ই হচ্ছে চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন জটিল ও সুক্ষ্ম বিষয়ের উপর বিস্তারিত আলোচনা।
আপনাদের অবগতির জন্য আমরা উল্লেখ করছি, ত্বকীয় তন্ত্রের অংশ বর্ননাকারী সুশ্রুতসংহিতার একটি অংশ যা পড়ে আপনারা কিছুটা ধারণা পাবেন, যে কতটা নিখুঁত একটি চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলেন এই আর্যবিজ্ঞানীরা।
ত্বক, মানবদেহের সবচেয়ে বড় প্রত্যঙ্গ, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক প্রত্যঙ্গও কিনা তা নিয়েও হতে পারে বিতর্ক।
কিন্তু তা আমাদের আজকের আলোচ্য নয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের চোখে এই ত্বকের কাজ অসংখ্য ও গুরুত্বপূর্ণ।
শরীরকে সকল ক্ষয়ক্ষতি থেকে সুরক্ষা দেয়া, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা, জল, ঔষধ শোষণ করা ইত্যাদি কতই না কাজ ত্বকের।
আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানমতে ত্বকের কিছু স্তর যথা-
১) এপিডার্মিস
২) স্ট্র্যটাম কর্নিয়াম
৩) স্ট্র্যটাম লুসিডাম
৪) স্ট্র্যটাম গ্র্যনুলোসাম
৫) স্ট্র্যটাম স্পাইনোসাম
৬) স্ট্র্যটাম জার্মিনেটিভাম
৭) ডার্মিস
৮) হাইপোডার্মিস
সুশ্রুতসংহিতার পূর্বতন্ত্রের শরীর স্থান খন্ডের চতুর্থ অধ্যয়ের চতুর্থ অনুচ্ছেদটি দেখে নেয়া যাক-
অথ সপ্ত ত্বকর্ননম
প্রথমস্ববভাসিনি নামা যা সর্বা…
অর্থাৎ এই হল ত্বকের সাতটি স্তর, প্রথমটি হল অবভাসিনি যার পুরুত্ব একটি চালের দানার ১৮ভাগের এক ভাগ।
দ্বিতীয় লোহিত নামা ব্রিহিসোদসভগপ্রমানা…
অর্থাৎ দ্বিতীয়টির নাম লোহিত যার পুরুত্ব একটি চালের দানার ১৬ভাগের এক ভাগ।
এর নাম লোহিতা এবং অনুবীক্ষন যন্ত্রের নিচে দেখলে দেখা যায় এর রঙ লাল বর্নের!
তৃতীয়া শ্বেতা নামা বৃহিদ্বাদশাভাগ… অর্থাৎ তৃতীয়টির নাম শ্বেত যার পুরুত্ব চালের দানার ১২ভাগের এক ভাগ।
এর নাম শ্বেত এবং অনুবীক্ষনযন্ত্রে এটি দেখতে সাদা রঙের!
চতুর্থি তাম্র নামা বৃহেরষ্টভাগপ্রমানা… অর্থাৎ চতুর্থটির নাম তাম্র যা থেকে বিভিন্ন খোঁস-পাঁচড়ার উদ্ভব হয় এবং এর পুরুত্ব চালের দানার ১৮ভাগের এক ভাগ।
এর নাম তাম্র এবং অনুবীক্ষনযন্ত্রে দেখা যায় এই স্তরটি তাম্র রঙের!
পঞ্চমি বেদিনি নামা বৃহিপঞ্চভাগা… অর্থাৎ পঞ্চমটির নাম বেদিনি যা হতে কুষ্ঠরোগের উদ্ভব হয় এবং এর পুরুত্ব চালের দানার পাঁচ ভাগের একভাগ।
আধুনিক বিজ্ঞান অনুসারে ত্বকের পঞ্চম স্তরটির অপর নাম স্ট্র্যটাম বেসেল অর্থাৎ যে স্তরটি ভিত্তি হিসেবে কাজ করে!
ষষ্ঠি রোহিনি নামা বৃহিপ্রমানা…
ষষ্ঠ স্তরের নাম রোহিনী যা থেকে টিউমার,এলিফেন্থিয়াসিস ইত্যাদির উদ্ভব হয়। এটির পুরুত্ব চালের দানার পুরুত্বের সমান।
রোহিনী শব্দের অর্থ হল নিরাময়কারী এবং আধুনিক বিজ্ঞানমতে ষষ্ঠ স্তর থেকেই ত্বকীয় ক্ষতের নিরাময় শুরু হয়!
জীব বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে এই স্তরেই আমাদের ঘর্মগ্রন্থি, তৈল গ্রন্থিসমূহ থাকে অর্থাৎ এই স্তর থেকেই ত্বকে ঘাম,তেল এসব নিঃসরণ হয়।
সপ্তমি মংসধর নামা বৃহিদ্বয়া…
অর্থাৎ সপ্তমটির নাম মংসধর যা থেকে ফিস্টুলা,এবসেস এর উৎপত্তি এবং যার পুরুত্ব চালের দানার দ্বিগুন।
এই নামের কারন হচ্ছে আধুনিক বিজ্ঞানমতে এই স্তরটিই মাংস ধরে রাখে অর্থাৎ নিচে অবস্থিত মাংসপেশীকে আঁটকে রাখে!
প্রাচীন ভারতের আর্যদের এই অসাধারন বিজ্ঞানচর্চা মানবসভ্যতার জন্য এক অনন্য নিদর্শন ছিল।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে এমন পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ আগে রচিত হয়নি।
পাশ্চাত্য ডাক্তার ওয়াইজ এই শ্লোকের টীকাতেও সেই কথাটিই বলেছেন-
Mangshadhara Is The Cellular Tussue That Retains The Muscles In Their Places!
এত নিখুঁতভাবে এত সহস্র বছর আগেই ত্বকের স্তরের ন্যায় সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিষয়ের বর্ণনা দিয়ে যাওয়া চমকপ্রদই বটে!
এমনই অসাধারণ সব নিদর্শন পাওয়া যায় পৃথিবীর প্রাচীনতম বিস্তারিত চিকিৎসাবিজ্ঞান গ্রন্থ এই সুশ্রুত সংহিতায় যা একজন ঋষি কর্তৃক রচিত।
পৃথিবীতে রোগতত্ত্বের এনসাক্লোপিডিয়া নামে খ্যাত
Encyclopedia of Epidemiology এর Volume 1 এ
Sarah Boslaugh লেখেন –
“The Hindu text known as Sushruta Samhita is possibly the earliest effort to classify diseases and injuries”
অর্থাৎ সুশ্রুত সংহিতাই সম্ভবত রোগতত্ত্ব সম্পর্কিত প্রাচীনতম বই।
Pingback: প্রথম অস্ত্রোপচারের জনক মহর্ষি সুশ্রুত
বাহ্।অসাধারণ
Pingback: প্রথম মহিলা দার্শনিক ঋষিকা মৈত্রেয়ী | ঋষি যাজ্ঞবল্ক্য ও মৈত্রেয়ীর ইতিহাস - shivrupi
Pingback: সেন বংশের শেষ শাসক রাজা লক্ষ্মণ সেন
Pingback: প্রথম অস্ত্রোপচারের জনক মহর্ষি সুশ্রুত | সুশ্রুত সংহিতা
Pingback: প্রথম মহিলা দার্শনিক ঋষিকা মৈত্রেয়ী | ঋষি যাজ্ঞবল্ক্য ও মৈত্রেয়ীর ইতিহাস