আলোচিত সংবাদইতিহাসধর্মসনাতন ধর্ম

রাজা শশাঙ্ক | বাংলার ইতিহাসে গৌড়রাজ শশাঙ্কের কৃতিত্ব Best Article

রাজা শশাঙ্ক ও গৌড় রাজ‍্য
Spread the love

বাংলার ইতিহাসে গৌড়রাজ শশাঙ্ক ছিলেন বঙ্গভূমি তথা বাংলার প্রথম সার্বভৌম শাসক, যিনি বাংলা সনের প্রবর্তক গৌড় রাজ শশাঙ্ক নামে ইতিহাসে পরিচিত। শশাঙ্কের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব তিনি বাংলার ইতিহাসে প্রথম এবং বাঙ্গালী এবং স্বাধীন রাজা, যাঁর রাজ্যের সীমা বাংলার ভৌগোলিক এলাকার বাইরে বিস্তৃত হয়েছিল এবং পন্ডিতদের মতে তিনিই বাংলা সনের প্রবর্তক

শশাঙ্ক ও গৌড় রাজ‍্য
রাজা শশাঙ্ক ও গৌড় রাজ‍্য

শশাঙ্ক’ শব্দটি উচ্চারণ করলেই মনের মধ‍্যে চলে আসে এই বঙ্গভূমির সার্বভৌম রাজার ইতিহাস, যিনি সম্পূর্ণ নিজের পরিশ্রম ও জ্ঞানের মাধ্যমে পূর্ব ও উত্তর ভারতে বড় একটি রাজ‍্যের শাসক হয়েছিলেন।

বাংলার গৌরবময় প্রাচীন ইতিহাসে তিনি ব‍্যাতিক্রমী এক রাজা, যিনি তাঁর নিজের ভাগ্য নিজেই তৈরী করেছিলেন।

তাঁর শাসনামলের পূর্বে বড় বড় সাম্রাজ্যের অংশ হিসেবে এই বাংলাভূমি শাসন করা হতো।
প্রথম কোন একক ব‍্যাক্তি এই অঞ্চলের সিংহাসন আহোরণ করে ৩৫/৪৫ বছর শাসন করেন।

সূচীপত্র:-
রাজা শশাঙ্ক সম্পর্কে জানার উৎস
রাজা শশাঙ্কের রাজনৈতিক জীবন
রাজা শশাঙ্কের রাজত্ব লাভ
রাজা শশাঙ্কের উপাধি
রাজা শশাঙ্কের রাজধানী
রাজা শশাঙ্কের ধর্মীয় পরিচয়
রাজা শশাঙ্কের গৌড়তন্ত্র
রাজা শশাঙ্কের সাথে হর্ষবর্ধনের যুদ্ধ
রাজা শশাঙ্কের রাজধানী
রাজা শশাঙ্কের রাজত্বকালের গুরুত্ব ও রাজত্ব সময়
রাজা শশাঙ্কের নেতৃত্বে গৌড়ের উত্থান
রাজা শশাঙ্কের শাসনামলের মুদ্রা
রাজা শশাঙ্কের শাসনামলের বাণিজ্য সমৃদ্ধি
রাজা শশাঙ্কের কৃতিত্ব
রাজা শশাঙ্কের রাজত্বকালের গুরুত্ব
রাজা শশাঙ্কের শাসনামলে কৃষিক্ষেত্র
রাজা শশাঙ্কের মৃত‍্যুর পরবর্তী রাজ‍্যের অবস্থা

বাংলা ভূমিতে জন্ম ও শক্তিশালী হয়ে ওঠা প্রথম শক্তিশালী রাজা হলেন শশাঙ্ক।
তাঁর কোন রাজবংশ তৈরি না হলেও, বাংলার ইতিহাসে তিনি এককভাবে বিশেষ স্থান অর্জন করেছেন।
রাজা শশাঙ্কের মৃত্যুর পরে তাঁর পুত্র মানব মাত্র আট মাস ক্ষমতায় ছিল।

গুপ্তযুগের শেষের সময়ে দুর্বল শাসনব্যবস্থার কারণে ছোট ছোট স্বাধীন রাজ্যের উৎপত্তি হয়েছিল।

সেই সময় বাংলা অঞ্চলে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র তৈরি হয়েছিল। দক্ষিণ পুর্ব বাংলা ও পশ্চিম বাংলার দক্ষিণাঞ্চল নিয়ে ‘বঙ্গ রাজ্য’ এবং পশ্চিম ও উত্তর বাংলা নিয়ে তৈরি হয়েছিল ‘গৌড় রাজ্য’।

বিভিন্ন ঐতিহাসিক গ্রন্থে সেই সময়ে বাংলা রাজ্যের তিনজন স্বাধীন রাজার নাম পাওয়া যায়।
গোপচন্দ্র, ধর্মাদিত্য ও সমাচারদেব। এই তিনজন রাজা ৫২৫ থেকে ৬০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বাংলা রাজ্য শাসন করেছিলেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

গৌড়রাজ রাজা শশাঙ্ক সম্পর্কে জানার উৎস

রাজা শশাঙ্ক সম্পর্কে জানার নির্ভরযোগ‍্য সুত্রগুলো –

১. রাজা শশাঙ্কের শাসনামলের অষ্টম বছরের মেদিনীপুর তাম্রশাসন।

২. রাজা শশাঙ্কের শাসনামলের উনিশ বছরের মেদিনীপুর তাম্রশাসন।

৩. রাজা শশাঙ্কের তারিখবিহীন এগরা তাম্রশাসন (সঠিক সময় উল্লেখ নেই) এবং ৬১১ খ্রিস্টাব্দের গঞ্জাম তাম্রশাসন।

৪. রোটাসগড়ের পার্বত্য এলাকার দুর্গে পাওয়া একটি সিল, যেটা তাঁর প্রথম জীবনের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বেশকিছু তথ্য প্রদান করে।

৫. বাণভট্টের লিখিত ‘হর্ষচরিত’ এবং হিউয়েন সাঙ এর রচিত ‘সি-ইউ-কি’ নামক সাহিত্যিক গ্রন্থ। (যদিও হিউয়েনের রচিত এই গ্রন্থ অনেকটাই বিতর্কিত)

৬. ভাস্কর ভর্মার ‘দুবী’ তাম্রফলক।

৭. আফসাড় শিলালিপি।

রাজা শশাঙ্কের রাজনৈতিক জীবন

রাজা শশাঙ্কের বংশ পরিচয়, রাজনৈতিক জীবন এবং রাজত্ব লাভ সম্পর্কে ইতিহাসে নির্ভরযোগ‍্য তথ‍্য পাওয়া যায় না।

বিহারের সাসারাম জেলার রোটাসগড় অঞ্চলের পার্বত‍্য এলাকার দুর্গে পাওয়া একটি সিল ‘শ্রী মহাসামন্ত শশাঙ্ক’ থেকে ধারণা করা হয়, রাজা শশাঙ্কের রাজনৈতিক কর্মজীবন মহাসামন্তরূপে শুরু হয়েছিল।

রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় রাজা শশাঙ্ককে মগধের একজন গুপ্ত সম্রাট মহাসেন গুপ্তের পুত্র অথবা ভ্রাতুষ্পুত্র বলে ধারণা করেছেন।

আবার কয়েকজন তাঁর সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন, তিনি মহাসেন গুপ্তের অধীনস্থ একজন মহাসামন্ত ছিলেন।
এ বিষয়ে পর্যাপ্ত তথ‍্য প্রমাণ পাওয়া যায় নি, ধারণা করা হয় মহাসেন গুপ্তের মৃত্যুর পরে তিনি গৌড় রাজ‍্যের সঙ্গে মগধেরও শাসনকর্তা হন।

রাজা শশাঙ্কের রাজত্ব লাভ

রাজা শশাঙ্কের  ক্ষমতা আহোরণের তারিখ নিয়ে মতভেদ আছে। কারো মতে ৫৯০ কারো মতে ৬০০ এবং কেউ কেউ বলেন শশাঙ্ক সিংহাসনে বসেছিলেন ৬০৬ সালে।

ইতিহাসবিদদের মতে, ৬০৬ খ্রিস্টাব্দে হর্ষবর্ধনের সিংহাসন আরোহণের কিছু সময় পূর্বে (সাল সম্ভবত ৬০০-৬০৫ খ্রিস্টাব্দে মধ্যে কোন এক সময়) শশাঙ্ক গৌড়ের রাজা হিসাবে সিংহাসন আরোহণ করেন।

রাজা শশাঙ্কের রাজধানী

ক্ষমতা আহোরণ করেই রাজা শশাঙ্ক দীর্ঘদিন ধরে চলা রাজধানীর স্থান পরিবর্তন করে পাটালিপুত্র থেকে কর্ণসুবর্ণে নিয়ে আসেন।

(কিছু গ্রন্থে কানসোনা নামেও পরিচয় পাওয়া যায়)।

কিন্তু রাজা শশাঙ্কের এই ‘কর্ণসুবর্ণ’ রাজধানী কোথায় ছিল?

ধারণা করা হয়, কর্ণসুবর্ণ ছিল বর্তমান ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার কোনো একটি এলাকায়।

এই প্রশ্নের উত্তরে মতভেদ রয়েছে। প্রত্নতত্ববিদদের মতে, মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরের নিকটবর্তী রাঙামাটির এলাকার কাছাকাছি।

রাজা শশাঙ্কের রাজত্বকালের গুরুত্ব ও রাজত্ব সময়

রাজা শশাঙ্ক, আনুমানিক ৬০৬-৬৩৭ খ্রিস্টাব্দের কিছু সময়ের পূর্ব পর্যন্ত সগৌরবে রাজত্ব করেছিলেন বলে ইতিহাস বিশ্লেষকদের মত।

রাজা শশাঙ্কের শাসনামলে তৎকালীন সময় উত্তর ভারতের মালব, কনৌজ, থানেশ্বর, কামরূপ, গৌড় সহ বিভিন্ন আঞ্চলিক শক্তি নিজ নিজ স্বার্থ রক্ষার্থে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব এবং মৈত্রীর সম্পর্ক বজায় রাখত।

রাজা শশাঙ্ক সেই দ্বন্দ্ব ও মৈত্রীর সম্পর্কে অংশগ্রহণ করেন।রাজা শশাঙ্ক তাঁর শাসনামলে রাজ‍্যসীমা
উত্তর-পশ্চিম বারাণসী পর্যন্ত বিস্তৃত করে সমগ্র গৌড় দেশ, মগধ, বুদ্ধগয়া এলাকা এবং উড়িষ্যার একাংশ নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিলেন।

অনেকের মতে পুন্ডবর্ধণ তখন গৌড় রাজ‍্যের অধীনে ছিল।
কিন্তু বাংলার দক্ষিণ পুর্ব অঞ্চল তার রাজ‍্যের অধীনস্থ ছিল কিনা তা নিয়ে করে মতানৈক্য আছে।

এই সময় উত্তর ভারতে হর্ষবর্ধন নামে আরেকজন শক্তিশালী রাজা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন।

রাজা শশাঙ্কের সঙ্গে রাজা হর্ষবর্ধনের বৈরিতার কথা পাওয়া যায় প্রাচীন লেখক হর্ষবর্ধনের সভাকবি বাণভট্ট রচিত ‘হর্ষচরিত’ গ্রন্থে এবং চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙ এর লেখায়।

রাজা শশাঙ্কের নেতৃত্বে গৌড়ের উত্থান

রাজা শশাঙ্কের নেতৃত্বে গৌড়ের রাজ‍্যসীমা বিস্তৃত হয়েছিল। রাজা শশাঙ্ক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অঞ্চলগুলো নিয়ে একটি বিশাল গৌড় রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।

গুপ্ত বংশের পরে প্রথম কোন শক্তিশালী রাজা পুনরায় এই অঞ্চলের সিংহাসন আহোরণ করেন।
উত্তর ভারতের শক্তিশালী রাজাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে রাজা শশাঙ্ক গৌড়ের মর্যাদা অনেক বৃদ্ধি করেছিলেন।
রাজা শশাঙ্কের যুদ্ধ নৈপুণ্য ও রাজ‍্য বিস্তার, বিশেষ কৃতিত্বের পরিচয় বহন করে।

ভাস্কর বর্মার ‘দুবী’ তাম্রফলকের মাধ্যমে জানা যায়, গৌড় রাজ‍্যের শাসক হয়ে রাজা শশাঙ্ক প্রথম কামরূপ রাজ‍্য আক্রমণ করেন
এবং কামরূপ রাজ‍্যের ভগদত্ত বংশের রাজা সুস্থির বর্মার দুই পুত্র সুস্থিত বর্মা ও ভাস্কর বর্মাকে যুদ্ধে পরাজিত ও বন্দি করেন।

আফসাড় শিলালিপি থেকে জানা যায়, রাজা শশাঙ্কের আক্রমণের পূর্বে মহসেন গুপ্ত কামরূপের সুস্থিত বর্মাকে পরাজিত করেছিলেন,
কিন্তু রাজা সুস্থিত বর্মা পরবর্তীতে পুনরায় নিজের কামরূপ রাজ্যকে স্বাধীনভাবে প্রতিষ্ঠা করেন।

এর থেকে ধারণা করা হয়, উত্তরবঙ্গকে তিনি প্রথমেই গৌড় রাজ‍্যের অধীনস্থ করেছিলেন,
পরবর্তীতে তিনি মান রাজাকে পরাজিত করে দক্ষিণবঙ্গ জয় করেন।

এরপর রাজা শশাঙ্ক কলিঙ্গদেশে যুদ্ধযাত্রা করেন এবং তৎকালীন উড়িষ্যার রাজা কঙ্গোদরাজকে পরাজিত করে উড়িষ্যার চিল্কা নগর পর্যন্ত তাঁর রাজ্য বিস্তার করেন।

you may also like it…

বেদ থেকে বিজ্ঞানের সৃষ্টি

প্রথম মহিলা দার্শনিক

রাণী ভবশঙ্করী

ভারতীয় উপমহাদেশে খ্রিষ্টান ধর্ম প্রচারের ইতিহাস

রাজা প্রতাপাদিত‍্য

রাজা শশাঙ্কের সাথে হর্ষবর্ধনের যুদ্ধ

রাজা শশাঙ্কের রাজনৈতিক জীবনের অন‍্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, থানেশ্বরের পুষ্যভূতি বংশের শাসক হর্ষবর্ধনের সঙ্গে তার যুদ্ধ।
‘সকলোত্তরপথনাথ’ উপাধিপ্রাপ্ত হর্ষবর্ধন রাজা শশাঙ্ককে পরাজিত করতে পারেননি।

রাজা শশাঙ্কের সাথে হর্ষবর্ধনের বৈরিতার কারণটি জানতে হলে একটু অতীতে যেতে হবে।

কিছু ইতিহাসবিদদের মতে, রাজা শশাঙ্কের জন্মের বহু সময় পূর্বেই গৌড় র‍াজ‍্যের শাসন অধিকার নিয়ে মগধ ও মৌখরিদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধ চলতেছিল।

এজন্য মগধের গুপ্তগণ নিজেদের শক্তি বিস্তারের জন্য থানেশ্বরের পুষ্যভূতি বংশের রাজা প্রভাকর বর্ধনের সঙ্গে তাদের রাজকন্যার বিয়ে দেয় এবং এই বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন মহাসেনগুপ্তের পিতা।

তারপর মৌখরিরাজ অবন্তী বর্মার পুত্র গ্রহবর্মার সঙ্গে থানেশ্বরের রাজা প্রভাকর বর্ধনের নিজের কন্যা রাজশ্রীর বিয়ে দেন।
এই কারণে থানেশ্বর – মগধ – মৌখরিখণ, নিজেদের মধ‍্যে আত্মীয়তার কারণে কেউ কাউকে আর আক্রমণ করেনি।

বিয়ের কিছুদিন পর প্রভাকরের মৃত্যু হওয়ার পরে থানেশ্বর রাজ্যের ক্ষমতা আহোরণ করেন হর্ষবর্ধনের বড় ভাই রাজবর্ধন।

এমন সময়ে দেবগুপ্ত মালবের সিংহাসনে বসেন এবং রাজা শশাঙ্ক তাঁর সঙ্গে মিত্রতা স্থাপন করে।
এরমধ্যে মৌখরিদের সাথে গুপ্তদের শত্রুতা বৃদ্ধি পেলে রাজা শশাঙ্ক তার সুযোগ গ্রহণ করেন।

কারণ, পূর্বে মৌখরিগণ গৌড় রাজ‍্যকে নিজদের অধীনস্থ করতে চেয়েছিল। এজন্যই রাজা শশাঙ্ক ক্ষোধে দেবগুপ্তের সাথে মিত্রতা করে যৌথ বাহিনী গঠন করে প্রেরণ করেন মৌখরিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের উদ্দেশ্যে।

তারপর দেবগুপ্ত সুযোগ বুঝে কনৌজ আক্রমন করে মৌখরি রাজা গ্রহবর্মনকে হত্যা করেন ও রাজ্যশ্রীকে বন্দি করেন।

এমন সময়ে প্রভাকর বর্ধনের মৃত্যু হয় এবং এই মৃত্যুর সুযোগে রাজা শশাঙ্ক মৌখরিদের রাজধানী কান্যকুব্জ পৌঁছানোর পূর্বেই দেবগুপ্ত,
গ্রহবর্মাকে পরাজিত করে বধ করেন, সেইসঙ্গে রাজশ্রীকে বন্দী করেন।

তারপর দেবগুপ্ত থানেশ্বরের দিকে অগ্রসর হলে সেখানে তাঁকে প্রতিরোধ করেন প্রভাকর বর্ধনের পুত্র রাজ্যবর্ধন।
রাজ্যবর্ধনের সঙ্গে দেবগুপ্তের বড় যুদ্ধ সংগঠিত হয় এবং দেবগুপ্ত নিহন হয়।

পরবর্তীতে রাজা শশাঙ্ক কনৌজের অভিমুখে অগ্রসর হবার সময় রাজ্যবর্ধনের সাথে সংঘর্ষ হয়, এইসময় রাজা শশাঙ্কের মন্ত্রীগণ রাজ্যবর্ধনকে হত্যা করে।

অন‍্য একটি মতে, রাজবর্ধন কনৌজে আক্রমণ করেন বোনকে উদ্ধার করতে এবং দেবগুপ্তকে হত্যা করেন।
কিন্তু কনৌজে পুর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা ও বোনকে উদ্ধারের পূর্বেই নিহত হন রাজবর্ধন।

রাজ্যবর্ধনের মৃত্যু নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে, অনেকের ধারণা, রাজা শশাঙ্ক দেবগুপ্তকে যুদ্ধে সাহায্যের জন্য কণৌজের দিকে অগ্রসর হয়েছিলেন।

রাজা শশাঙ্কের সঙ্গে যুদ্ধে পরাজিত ও নিহত হয়েছিলেন রাজবর্ধণ।
আবার কেউ কেউ বলেন, রাজবর্ধন কোন কারণে রাজা শশাঙ্কের কাছে এসেছিলেন তখন শশাঙ্কের মন্ত্রীগণ রাজবর্ধনকে বধ করে।

যাইহোক, এরপর রাজা শশাঙ্ক আর এগিয়ে যাননি।
পুষ্যভূতিদের ছোট ভাই হর্ষবর্ধন ও কামরূপের রাজা ভাস্কর বর্মা তাঁর রাজধানী আক্রমণ করতে পারে, এই আশঙ্কায় তিনি দ্রুত তাঁর গৌড় রাজ‍্যে চলে আসেন।

এসময় পথিমধ‍্যে ভাস্করবর্মার দূত হংসবেগের সাথে সাক্ষাৎ হয় ও দূতের মাধ্যমে ভাস্করবর্মার সাথে মিত্রতা হয়, যদিও এই মিত্রতা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। কারণ ভাস্করবর্মার মনে থাকা ক্রোধ বাড়িয়ে দেন হর্ষবর্ধন।

রাজ্যবর্ধনের মৃত্যুর পরে মাত্র ১৬ বছর বয়সে থানেশ্বরের সিংহাসনে বসেন হর্ষবর্ধণ।
ভাই রাজ‍্যবর্ধনের মৃত্যুর কারণে হর্ষবর্ধণের সাথে রাজা শশাঙ্কের বৈরিতা সর্বোচ্চ বৃদ্ধি পায়।

ভাস্করবর্মার সঙ্গে বন্ধুত্বের প্রস্তাব নিয়ে এসে গৌড়ের রাজা শশাঙ্কের বিরুদ্ধে প্রণোদিত করে হর্ষবর্ধণ।
তাঁরা যৌথভাবে রাজা শশাঙ্কের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি দেন।

হর্ষবর্ধন এই সময় প্রতিজ্ঞা করেন তিনি তাঁর বড় ভাইয়ের হত‍্যার জন‍্য দায়ী রাজা শশাঙ্ককে হত্যা করে প্রতিশোধ নিবেন।

কিন্তু হর্ষবর্ধন ও ভাস্করবর্মার মিলিত সেনাবাহিনী রাজা শশাঙ্কের বিরুদ্ধে
উল্লেখযোগ্য প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারেননি হত‍্যা তো দূরের কথা!

যদিও রাজা শশাঙ্কের মৃত্যুর পূর্বে হর্ষবর্ধন বাংলা বা গৌড় রাজ‍্য দখল করতে না পারলেও, রাজা শশাঙ্কের মৃত্যুর পরেই গৌড় ও বাংলা হর্ষবর্ধনের অধীনে চলে যায়।

রাজা শশাঙ্কের ধর্মীয় পরিচয় | রাজা শশাঙ্ক কোন ধর্মের ছিল?

ব্রাক্ষ্মণ্যধর্মের পৃষ্ঠপোষক রাজা শশাঙ্ক শিবের উপাসক ছিলেন।
আর্যমশ্রীমূলকল্প নামের বৌদ্ধ গ্রন্থ এবং হিউয়েন সাঙ -এর ভ্রমণ বিবরণীতে তাঁকে বৌদ্ধবিদ্বেষী বলা হয়েছে।

রাজা শশাঙ্কের বিরুদ্ধে বৌদ্ধ ভিক্ষুকদের হত্যা এবং বৌদ্ধদের পবিত্র ধর্মীয় স্মারক ধ্বংস করার অভিযোগ রয়েছে।
হর্ষবর্ধনের সভাকবি বাণভট্টের রচিত ‘হর্ষচরিত’ গ্রন্থে রাজা শশাঙ্ককে এ বিষয়ে সমালোচনা করা হয়েছে।

কিন্তু অপরদিকে রাজা শশাঙ্কের শাসনামলের কয়েক বছর পরে হিউয়েন সাঙ রাজা শশাঙ্কের রাজধানী কর্ণসুবর্ণ নগরের নিকটবর্তী রক্তমৃত্তিকা বৌদ্ধবিহারের যথেষ্ট উন্নতি লক্ষ করেছিলেন।

চীনা পর্যটক ই-ৎ সিঙ -এর দৃষ্টি পড়েছিল বাংলায় বৌদ্ধধর্মের উন্নতির উপর, যদিও রাজা শশাঙ্কের মৃত্যুর কয়েক বছর পরের সময় এটি। যদি রাজা শশাঙ্ক বৌদ্ধবিদ্বেষী হত তাহলে এমন উন্নতি হত না।

রাজা শশাঙ্ককে বৌদ্ধ বিরোধী রাজা হিসেবে উল্লেখ করা বানভট্ট ও হিউয়েন সাঙ -এদের রচিত গ্রন্থের প্রতি তথ‍্যের সত্যতা নিয়ে ইতিহাসবিদেরা দ্বিমত পোষণ করেছেন।

বিশ্লেষকদের ধারণা, রাজা শশাঙ্কের প্রতি লেখকগণ বিদ্বেষী মনোভাবের  ছিল, কেননা বাণবট্ট ছিল হর্ষবর্ধনের সভাকবি এবং হিউয়েন সাঙ হর্ষবর্ধনের আমন্ত্রণে এসেছিলেন।

তাই, বৈরী মনোভাব থাকাই স্বাভাবিক। অপরদিকে হিউয়েন সাঙের রচনা অনেক প্রশ্নবিদ্ধ।  অতএব, রাজা শশাঙ্ক সম্পর্কে তাদের লিখিত গ্রন্থগুলো অনেকটাই অতিরঞ্জিত ছিল।

তাই পন্ডিতগণের ধারণা, হর্ষবর্ধনের প্রশংসা  লিখতে গিয়ে তারা রাজা শশাঙ্কের বিরুদ্ধে অতিরঞ্জিত করেছিলেন।

রাজা শশাঙ্কের শাসনামলে ধর্মীয় উন্নতি

রাজা শশাঙ্কের শাসনামলে বাংলা এবং সমতটের শাসকদের বেশিরভাগ ব্রাহ্মণ্য ধর্মের অনুরাগী ছিল।
এই সময় বিষ্ণু, কৃষ্ণ এবং শিব পুজোর প্রথা ছিল। চীনা পর্যটকদের দৃষ্টিতে বৌদ্ধ ধর্মীয় স্থানের ও উন্নতি হয়েছিল।

রাজা শশাঙ্কের গৌড়তন্ত্র

রাজা শশাঙ্কের শাসনামলে গৌড়ে তৈরী হওয়া শাসন ব্যাবস্থাকে গৌড়তন্ত্র বলা হয়।
এই গৌড়তন্ত্র ব্যাবস্থার মাধ্যমে রাজ্যের কর্মচারীগণ একটা নির্দিষ্ট শাসন পদ্ধতি গড়ে তুলেছিল।

পূর্বে গ্রামের কাজগুলো, যেগুলো স্থানীয় লোকজন করত; রাজা শশাঙ্কের শাসনে সেই কাজে কেন্দ্রীয় প্রশাসন হস্তক্ষেপ করতে শুরু করে।
অর্থাৎ, ঐ সময়ে গৌড় রাজ্যে কেন্দ্রীয় ভাবে সরকার পরিচালনা করা হত।

রাজা শশাঙ্কের শাসনামলের মুদ্রা

রাজা শশাঙ্কের শাসনামলে সোনার মুদ্রা বিনিময় হত। যদিও ঐ মুদ্রার মান কমে যায়। সেই সময় নকল সোনার মুদ্রাও দেখা যেত। রূপার মুদ্রা ছিল না।

রাজা শশাঙ্কের শাসনামলে বাণিজ্য পরিস্থিতি

ধারণা করা হয়, রাজা শশাঙ্কের শাসনামলে এক সময়ে ব্যবসা বাণিজ্যের পরিস্থিতি সম্ভবত অবনতি হয়েছিল।
কৃষি নির্ভর অর্থনীতির কারণে সমাজে জমির চাহিদা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছিল।
নগরের গুরুত্ব কমে যায়, বাণিজ্য পরিস্থিতির অবনতির কারণে।

রাজা শশাঙ্কের শাসনামলে কৃষিক্ষেত্র

রাজা শশাঙ্কের শাসনামলে কৃষির গুরুত্ব বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে, সমাজ ক্রমশ গ্রামকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছিল।
সমাজে স্থানীয় প্রধানদের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছিল। বণিকদের গুরুত্ব ও ক্ষমতা অনেকটাই কমে যায়।

রাজা শশাঙ্কের মৃত‍্যুর পরবর্তী রাজ‍্যের অবস্থা

রাজা শশাঙ্ক এরপর বেশ কিছুদিন রাজত্ব করেন। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর তথ্য নিয়ে ঐতিহাসিকরা দ্বিধাবিভক্ত।

হিউয়েন সাঙের বিবরণী থেকে জানা যায় রাজা শশাঙ্ক কনৌজ থেকে কর্ণসুবর্ণ আসার পথে বুদ্ধগয়াতে বৌদ্ধমন্দির ধবংস করেন এবং এই পাপের ফলে তিনি কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যান।

হিউয়েন সাঙ এর আরেকটি রচনায় পাওয়া যায়, রাজা শশাঙ্ক বুদ্ধগয়া আসার পূর্বেই মৃত্যুবরণ করেন। আর্যমঞ্জুশ্রী মূলকল্প নামক বৌদ্ধ গ্রন্থে এই একই তথ্য পাওয়া যায়।

অথচ হিউয়েন সাঙ যখন বুদ্ধগয়া হয়ে রাজা শশাঙ্কের রাজধানী কর্ণসুবর্ণে আসেন,
তখন তিনি কর্ণসুবর্ণের বিখ্যাত রক্তমৃত্তিকা বৌদ্ধবিহার দেখে তাঁর ভ্রমণ বিবরণীতে উল্লেখ করেন- এখানের লো-টো-উই বিখ্যাত রক্তমৃত্তিকা বৌদ্ধবিহার।

এই বৌদ্ধবিহারের ১০টি সংঘরামে চার হাজারেরও বেশি বৌদ্ধসন্ন্যাসীর বাসভূমি। তাহলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন হয়-
যে রাজার রাজধানীতে চার হাজার বৌদ্ধ সন্ন্যাসী বসবাস করে, সেই রাজা কীভাবে বুদ্ধগয়া ধ্বংস করেন?

একজন লেখকের একই ভ্রমণ বিবরণীতে দুই রকম তথ‍্য পেয়ে ঐতিহাসিকগণ দ্বিধান্বিত হয়েছিল।
ঐতিহাসিকগণ আরও অবাক হয়েছিল, হর্ষবর্ধনের সভাকবি বাণভট্টের কাব্যনিন্দা দেখে।

বাণভট্ট লিখেছেন – রাজা শশাঙ্ক হর্ষবর্ধনকে নিজের রাজধানীতে নিয়ে গিয়ে একাকী নিরস্ত্র অবস্থায় হত্যা করে।
বহু বছর পরে হর্ষচরিতের এক টীকাকার তার লেখায় উল্লেখ করেন,
গুপ্তচরের মাধ্যমে রাজা শশাঙ্কের কন্যার সঙ্গে বিয়ের জন্য আমন্ত্রণ পেয়ে শত্রুশিবিরে আহারে মত্ত থাকা অবস্থায় তখন তাঁকে হত‍্যা করেন রাজা শশাঙ্ক।

কিন্তু বাণভট্ট এই কথা কোথাও বলেন নাই, তাই এই তথ্য মিথ্যা হিসাবে ধারণা করা হয়।
বিশিষ্ট ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার, তাঁর History of Ancient Bengal গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, কনৌজের পথেই রাজা শশাঙ্কের সঙ্গে রাজ্যবর্ধনের যুদ্ধ হয় এবং পরবর্তীতে রাজ্যবর্ধন পরাজিত ও নিহত হয়।

এই তথ্যে রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, রমাপ্রসাদ চন্দ্র সহ বেশ কয়েকজন ঐতিহাসিকগণ সহমত প্রকাশ করেন।

রাজা শশাঙ্কের কৃতিত্ব

সবশেষে আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি যে-
উত্তর ভারতের দুই রণোন্মত শক্তির সন্মিলিত অভিযানেও যে ব‍্যাক্তি অটল ছিল, যে ব‍্যাক্তি গৌড়-বাংলা, উড়িষ্যা, মগধ, বারাণসী পর্যন্ত তাঁর রাজ‍্যের সীমানা বৃদ্ধি করে বিশাল রাজত্বের অধিকারী হয়েছিলেন, তাঁর সম্পর্কে শুধু হর্ষবর্ধনের রাজসভার কবি বাণভট্ট এবং ভ্রমণকারী হিউয়েন সাঙের লেখার উপর বিশ্বাস করা যায় না।

এর কারণ তাঁরা দুজনেই ছিলেন বিতর্কিত ও গোঁড়া বৌদ্ধ। রাজা শশাঙ্ক শুধুই শিবের ভক্ত ছিলেন না, তিনি ছিলেন ব্রাক্ষ্মণ্যধর্মের পৃষ্ঠপোষক এবং বৌদ্ধধর্মের একজন সহৃদয় শুভাকাঙ্ক্ষী।

রাজা শশাঙ্ক স্থায়ী রাজবংশ তৈরি করেন নাই। এ কারণে তাঁর মৃত্যুর পরে গৌড়ের ক্ষমতা ও গৌড়তন্ত্র নষ্ট হয়।
আর্যমঞ্জুশ্রী মূলকল্প গ্রন্থ অনুযায়ী রাজা শশাঙ্কের মৃত্যুর পরে তাঁর পুত্র মানব মাত্র আট মাস পাঁচদিন গৌড় রাজত্ব করেছিলেন।

তারপর বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা শুরু হয় বাংলায়। তারপর বাংলার বুকে নেমে আসে চরম অরাজকতা এবং এই বিশৃঙ্খলার মাধ্যমে গৌড় রাজ‍্য ভেঙে কয়েকটি রাজ‍্য হয়।

রাজা শশাঙ্কের মৃত্যুর পরে হর্ষবর্ধন গৌড়ের অনেকটা এলাকা দখল করেন। রাজা শশাঙ্কের মৃত্যুর দশ বছর পরে হর্ষবর্ধন ও মারা যান।
তারপর বাংলার কিছু অংশ প্রথমে কামরূপের রাজা এরপরে নাগ সম্প্রদায়ের জয়নাগ (মতান্তরে ভাষ্কর বর্মণ) তারপর তিব্বতের শাসকরা শাসন করেন।

কিছুদিনের মধ্যে তাদের শাসনের সমাপ্তি ঘটে এবং এই অঞ্চলের শাসন ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে বিশৃংখলা দেখা দেয় সমগ্র বাংলায়।
১০০ বছরের বেশি সময়ের জন্য গভীর নেতৃত্ব সংকটে পতিত হয় এই বাংলাভূমি। যার যার ইচ্ছেমতো নিজ এলাকা শাসন করত।

পন্ডিতদের মতে, এই বিশৃঙ্খলার সুযোগে অষ্টম শতকে কনৌজ এবং কাশ্মীরের শাসকরা বাংলা আক্রমণ করেছিলেন। বাংলার এই বিশৃঙ্খল/অরাজকতার সময়কে মাৎস্যন্যায়ের যুগ বলা হয় ইতিহাসে।

মাৎস্যন্যায় শব্দের অর্থ হল, দেশে স্থায়ী রাজা/শাসকের অভাবের ফলে সংগঠিত হওয়া অরাজকতা। অরাজকতার সময়ে শক্তিশালী লোক দুর্বল লোকের ওপর অত্যাচার/নিপীরণ করে।

কয়েক বছর এই অবস্থা থাকার পরে বাংলার প্রভাবশালী লোকজন যৌথ মতামতের মাধ্যমে খ্রিস্টীয় অষ্টম শতকের (মতান্তরে ৭৫০ খ্রিষ্টাব্দ) মাঝামাঝি সময়ে গোপাল নামক একজনকে রাজা নির্বাচন করে।
তারপর থেকেই পাল বংশের রাজত্ব শুরু হয় বাংলায় আর রাজা শশাঙ্কের রাজত্বের অবসান হয়!

3 thoughts on “রাজা শশাঙ্ক | বাংলার ইতিহাসে গৌড়রাজ শশাঙ্কের কৃতিত্ব Best Article

  • Pingback: বাংলা সনের প্রবর্তক কে? | বাংলা সনের ইতিহাস | বাংলা মাসের উৎপত্তি - shivrupi

  • “Sohobangla.com” একটি প্রযুক্তি তথ্যের বাংলা প্লাটফর্ম। এখানে বিশ্বের প্রযুক্তি সম্পৃক্ত সকল জানা-অজানা তথ্য প্রকাশ করা হয়। “সহবাংলা ডটকম” এর লক্ষ্য সবার মাঝে প্রযুক্তির জ্ঞান ছড়িয়ে দেয়া। Sohobangla একটি পেশাদার সংবাদ, শিক্ষা, প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্ম। এখানে আমরা আপনাকে শুধুমাত্র আকর্ষণীয় সামগ্রী প্রদান করব, যা আপনি খুব পছন্দ করবেন। নির্ভরযোগ্যতা এবং প্রযুক্তি বিষয়ক নিবন্ধ, অনলাইন আয় এবং সংবাদের উপর ফোকাস সহ আমরা আপনাকে সর্বোত্তম সংবাদ, শিক্ষা, প্রযুক্তি প্রদান করতে নিবেদিত। আমরা সংবাদ, শিক্ষা, প্রযুক্তির প্রতি আমাদের আবেগকে একটি ক্রমবর্ধমান অনলাইন ওয়েবসাইটে পরিণত করার জন্য কাজ করছি। আমরা আশা করি আপনি আমাদের সংবাদ, শিক্ষা, প্রযুক্তি যতটা উপভোগ করবেন ততটা উপভোগ করবেন যতটা আমরা আপনাকে অফার করছি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বে প্রতিনিয়ত ঘটে যাচ্ছে নানান ধরনের ঘটনা। আধুনিক বিশ্বের সাথে এগিয়ে যেতে হলে নতুন নতুন সব উদ্ভাবন ও আবিষ্কারের সাথে পরিচিত থাকা এখন সময়ের দাবী। সহবাংলা ডটকম এর লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশের প্রতিটি জায়গায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির আলো পৌঁছে দেয়া, যাতে সবাই মিলে আরও সুন্দর একটি ডিজিটাল সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারি।

    https://www.sohobangla.com/

    Reply
  • Pingback: বাংলা সনের প্রবর্তক কে? | বাংলা সনের ইতিহাস | বাংলা মাসের উৎপত্তি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *