ইতিহাসধর্মবিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসনাতন ধর্ম

প্রথম অপারেশন এর জনক মহর্ষি সুশ্রুত | সুশ্রুত সংহিতা

প্রথম অস্ত্রোপচারের জনক ঋষি সুশ্রুত
Spread the love
সুশ্রূত 3
মহর্ষি সুশ্রুত

প্রথম অপারেশন এর জনক মহর্ষি সুশ্রুত | সুশ্রুত সংহিতা

পর্ব – ২ ( শেষ পর্ব)

১ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন!

সাধারণ চিকিৎসা শাস্ত্রের (Medical Science) এর সংজ্ঞা এমন,
“the science of dealing with the maintenance of health and the prevention and treatment of disease.”

কিন্তু যখন আমরা আয়ুর্বেদের বিষয়ে আসি তখন দেখা যাবে
“the medical treatise summarizing the art of healing and prolonging life.”

কেবল চিকিৎসাকে আয়ুর্বেদ বলা যায় না। আয়ুর্বেদ আয়ু বদ্ধির সকল প্রক্রিয়াকে নিয়ে গঠিত, যদিও প্রায় কাছাকাছি অর্থই দাঁড়ায়।

অনেকে আবার এটাকে কেবল Herbal care মনে করে, কিন্তু এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা।

প্রাচীন ভারতের চিকিৎসা ব‍্যাবস্থায় গাছগাছালী বেশি ব্যবহার হতো ঠিকই, কিন্তু তার মানে এই না যে সব গাছপালার উপরই নির্ভরশীল ছিলো।

আরও অনেক ধরনের ব‍্যাবস্থা ছিলো যা এই বইগুলি পড়লে বুঝা যায়। ছোট একটা উদাহরণ

সুশ্রুত সংহিতা মূলতঃ বৈদিক চিকিৎসা শাস্ত্র যাকে মহর্ষি সুশ্রুত একত্রিত এবং সুসজ্জিত ভাবে পুস্তকাকারে মুদ্রিত করেছেন।

গ্রন্থের প্রথমেই দেখা যায় চিকিৎসা শাস্ত্রের বিভাজন। ধন্বন্তরি অবতার দিবোদাস বলছেন, আয়ুর্বেদ যা অথর্ববেদের একটি অংশ মাত্র।

এটি ব্রহ্মার মুখে বিশালাকারে প্রকাশিত হয়। কিন্তু মানবমস্তিস্কের কথা ভেবে একে ৮ ভাগে ভাগ করা হলো।

যথা –
(১) শল্য তন্ত্র  Ulcer, পাথর, জমাট বাধা রক্ত, অতিরিক্ত হাড় ইত্যাদি মুক্তকরণ মূলত যেকোনো কিছু শরীর থেকে বের করা।

(২) শালক্য তন্ত্র – চোখ, নাসিকা আদি গলার উপরের অঙ্গের চিকিৎসা।

(৩) কায় চিকিৎসা – জ্বর, আমাশয়, Haemoptysis, উন্মাদনা, Hysteria, কুষ্ঠরোগ, মূত্রনালী থেকে অপ্রাকৃত স্রাব ইত্যাদি রোগের চিকিৎসা।

(৪) ভূত বিদ্যা – ভূতে ধরা ইত্যাদি মানসিক রোগমুক্তি।

(৫) কৌমার ভৃত্য – শিশুপালন

(৬) অগদ তন্ত্র – Toxicology বা বিষবিদ্যা।

(৭) রসায়ন তন্ত্র – আয়ু বৃদ্ধির বিভিন্ন প্রক্রিয়া।

(৮) বাজিকরণ তন্ত্র – শুক্রাণু এবং তার বিষয়ে আলোচনা। তাছাড়া আছে বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসক বা বৈদ্যের বর্ণনা, কে বৈদ্য হতে সক্ষম আদি আলোচনা।

সেই ব্যক্তিই সেবার জন্য বা রোগীর শয্যাতে যোগ দিতে উপযুক্ত, যিনি শান্ত এবং যার আচরণ আনন্দদায়ক।

কারও সম্পর্কে খারাপ কথা বলেন না, অসুস্থ ব্যক্তির প্রয়োজনীয়তার প্রতি দায়িত্বশীল এবং মনোযোগী এবং অনিবার্যভাবে চিকিৎসার নির্দেশ অনুসরণ করে।
সুশ্রুত সংহিতা, ১/৩৪

সুশ্রুত সংহিতা পিডিএফ পড়তে এখানে ক্লিক করুন!

তিনি তার গ্রন্থের বড় একটা অংশ রেখেছেন শল্যচিকিৎসা বা সার্জারির জন্য।

১৪ রকম পদ্ধতিতে ১৫ রকম ফ্র্যাকচার বা হাড় ভাঙ্গা সারানোর কথা বলা হয়েছে বইটিতে।

বইটি পড়লে দেখা যায় প্রাচীনকালে যুদ্ধবিগ্রহে অনেকের অঙ্গহানী  হতো যা মেরামতের পদ্ধতি ঋষি ঋষি সুশ্রুত বলে গিয়েছিলেন।

যেমন সুশ্রুত দেহের অন্য অংশ থেকে চামড়া এনে কেটে যাওয়া নাক মেরামতের বর্ণনা দিয়েছেন। এজন্যই ঋষি সুশ্রুতকে প্লাস্টিক সার্জারির জনক বলা হয়।

আধুনিক চিকিৎসাবিদ্যায় ঠিক এই কাজগুলোই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে করা হয়।

আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, নাকের অস্ত্রোপচার যা এখন রাইনোপ্লাস্টি নামে পরিচিত, তখনকার সময় থেকেই চলে আসছে। এখানেই শেষ নয়।

বিশ্বাস করতে কষ্ট হলেও সত্যি যে, সুশ্রুত সংহিতার ষোড়শ অধায়ে অটোপ্লাস্টি এবং ল্যারিংগোপ্লাস্টি’র মতো অপারেশনের বর্ণনা পাওয়া যায়।

সুশ্রুত ই সম্ভবত বিশ্বের প্রথম চিকিৎসক, যিনি পেট কেটে সন্তান প্রসব করানোর (caesarean delivery) পরামর্শ দিয়েছিলেন। এমনকি চোখের ছানি অপারেশন করতেন সুশ্রুত

প্রায় ২৬০০ বছরের পুরনো বইটিতে আছে ডায়বেটিস (মধুমেহ), হৃদশূল( হার্ট এটাক),  হাইপারটেনশন(রক্তগত বাত) সহ অসংখ্য আধুনিক রোগের বর্ণনা ও চিকিৎসা।

ধাত্রীবিদ্যা, দন্তচিকিৎসা (Dentistry), Lithotomic Operations, বিভিন্ন ধরনের কাটাছেঁড়া (Amputations, Dissection),
হাড় জোড়া লাগানো, Anatomy, ভ্রুণতত্ত্ব (Embryology),
Sexual Dimorphism, Anabolic and Catabolic occurances,
রোগপ্রতিরোধ এবং সুস্থ থাকার সব রকম উপায় তিনি তার গ্রন্থে বলে গেছেন।

রোগ গুলিকে তিনি মূলতঃ তিন প্রকারের দোষের ফল হিসাবে বর্ণনা করেছেন —

১. বাত, ২. পিত্ত, ৩. কফ (সাধারণ বাংলা শব্দের সাথে তুলনীয় নয়)।
Ulcer, মধুমেহ (Diabetes), কুষ্ঠ, রক্তচাপ, Blood Fluids সম্পর্কিত তথ্য,
হৃত শল (Heart Pain) ইত্যাদি রোগের বর্ণনাও পাওয়া যায় এতে।

উৎস ইত্যাদি অনুযায়ী ৩০০ থেকে ৩৬০টি হাড়ের বর্ণনা পাওয়া যায় যার মধ্যে Endo skeleton এর সাথে Exo skeleton যথা দাঁত নখকেও রেখেছেন তিনি।

অনেকেই বিভ্রান্ত হন কারণ আমরা ২০৬টি হাড়ের যেই বর্ণনা পড়ি তা প্রাপ্তবয়স্ক মজবুত (Endo skeleton) হাড়ের কথা কেবল, এছাড়াও অনেক গভীর আলোচনা আছে এতে।

Balanced Diet, যোগসাধনা ইত্যাদি নিয়ে তিনি সম্পূর্ণ গ্রন্থটি মুদ্রিত করেছেন মোট ১৮৬ অধ্যায়ে। যা ৬ ভাগে বিভক্ত —

১. সুত্র স্থান – ৪৬ অধ্যায়

২. নিদান স্থান – ১৬ অধ্যায়

৩. শরীর স্থান – ১০ অধ্যায়

৪. চিকিৎসা স্থান – ৪০ অধ্যায়
৫. কল্প স্থান – ৮ অধ্যায়

৬. উত্তর তন্ত্র – ৬৬ অধ্যায়

এই গ্রন্থে তিনি ১১২০ ধরনের রোগের উল্লেখ করেছেন, ৭০০ ভেষজ, ৬৪ minerals এবং ৫৭ প্রাণিজাত ঔষধির কথা বলেছেন।

তার শল্যচিকিৎসার কীর্তি এবং Cosmetic Surgery তে অবদানের জন্য তাকে Father of Surgery এবং Father of Plastic Surgery হিসাবে আক্ষায়িত করা হয়।

তার বর্ণনাকৃত ৩০০ রকমের যন্ত্রপাতি (surgical instruments) এখনো ব্যবহার হয় আমাদের মেডিকেল হাসপাতাল গুলিতে।

সুশ্রুত সংহিতায় চিকিৎসকের জন্য Anatomy শিক্ষার বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এবং মৃত দেহ থেকে তার জ্ঞান অর্জনের জন্য বলা হয়েছে।

ছাত্রদের শল্যচিকিৎসা শিক্ষার জন্য বিভিন্ন কুমার জাতীয় ফল, মৃত প্রাণী ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে।

মহান ঋষি সুশ্রুতের অপারেশন
মহান ঋষি সুশ্রুতের অপারেশন

অনেকে আবার এই ধারণা যে এই বইগুলিতে যা আছে তাই করতে হবে। তাদের এই মতবাদ নিতান্তই হাস্যকর।

উন্নয়ন ও যুগোপযোগী করে তোলাকে হিন্দুশাস্ত্র সর্বদা অগ্রাধিকার দিয়েছে। তার একটা ঘটনা বলি,

সাল ১৭৯৪, তখনো “রয়াল সোসাইটি অফ সার্জারি” প্রতিষ্ঠিত হয় নি। ব্রিটেনে প্রথম প্রথম ম্যাগাজিন বের হচ্ছে তখন।

The Gentleman’s Magazine, October 1794 এর মুদ্রনে একটা লেখা উঠে আসে। ভারতের পুনেতে এক ব্যক্তি Nose Surgery করছে (Rhinoplasty নাম তখনও প্রচলিত হয় নি)।

সে করছে এমন যে কপালের চামড়া কেটে তা দিয়ে নাক পুনর্নির্মাণ করছে, সুশ্রুত সংহিতায় যদিও বলছে গালের চামড়া দিয়ে করতে।

বিশেষ উল্লেখ্য এই যে, সে চামড়া সুশ্রুতের মতো সম্পূর্ণ কেটে ফেলছে না, বরং এক ভাবে যুক্ত রেখেই লাগিয়ে দিচ্ছে যার ফলে চামড়া মরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

তাহলে বুঝা তো গেলোই বর্তমান Medical Science কিভাবে আয়ুর্বেদের অংশ, বলতে গেলে উন্নত আয়ুর্বেদ। তারা আবার এমন ধারণায় বিশ্বাসী যে, আয়ুর্বেদ আসলে Herbal চিকিৎসা।

যাই হোক, Surgery এর ইতিহাসে আসি। পুনের সেই লোকের নাম ছিল Cowsjee,
এই বিষয়ে YouTube এর কয়েকটি ভিডিও আছে এখন এই Cowsjee এর নাম থেকে Chirurgie এবং তা থেকে এসেছে Surgery নাম বলা হচ্ছে।

এর কারণ হিসাবে বলা হচ্ছে সেই সাধারণ গল্প, কাটাকাটি তো তৎকালীন প্রতিটা যুদ্ধের ঘটনা।
কিন্তু এই Rhinoplasty করতে তারা ব্যর্থ হচ্ছিল।

যা সফল ভাবে প্রয়োগ করছে ভারতের এই গাড়োয়ান কিম্বা কুমার৷ যার কারণে তার প্রতি এতো আগ্রহ ছিলো বিদেশিদের।

এভাবেই সুশ্রুত সংহিতা পুনরায় প্রচারিত হতে শুরু করে।

১৮৯০ সালের দিকে স্যার হেমিলটনের আবিষ্কৃত রাশিয়া অঞ্চলের এক প্রাচীণ নথির কথাও বিশেষ শুনা যায় যা আত্রেয়, হরিত, পরাসর, বশিষ্ঠ, সুশ্রুত আদি কিছু বিশেষ চিকিৎসকের কথা উল্লেখ করছে।

যা সুশ্রুত সংহিতাকে আরও আগ্রহের কেন্দ্র করে তোলে।
এটার মূল কারণ বিদেশিরা মানতে নারাজ ছিল,
এই উপমহাদেশের মানুষ কোনো ভাবেই এতো উন্নতি করতে পারে না।

তারা শতপথ ব্রাহ্মণ ইত্যাদি দেখে শেষে এটাকে ৬০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের বলে চালিয়ে দেয়।
তাও মহাভারতের আমলের ব্যক্তি হিসাবে সুশ্রুতকে মানতে পারে না।

you may also like..

গোয়ালিয়র দূর্গ: এক অসাধারণ সনাতনী স্থাপত্য!

সম্রাট অশোক: ভারতবর্ষের এক মহান সম্রাট!

তাজ মহল, নাকি তেজ মহালয়?

সম্রাট সুমদ্রগুপ্ত: ভারতবর্ষের নেপোলিয়ন!

যাই হোক,  সুশ্রুত প্রাচীণতম চিকিৎসা বিদ্যার পণ্ডিত, শল্যচিকিৎসার জনক।

সাম্প্রতিক যেসব চিকিৎসাবিজ্ঞানীগণ চিকিৎসাশাস্ত্রে সুশ্রুতের অবদান বিষয়ে আলোচনা করেছেন,
তাঁর মধ‍্যে উল্লেখযোগ্য আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শল্যচিকিৎসক –

Kenneth K K O.
(যিনি Department of Otolaryngology, Head and Neck Surgery,
University of Virginia Health System, Charlottesville,  USA. এর সাথে সংযুক্ত)
তিনি তাঁর
“The midline forehead flap in nasal reconstruction”,
শীর্ষক গবেষণাপত্র, যেটি প্রকাশিত হয় ‘Facial Plastic Surgery Clinics of North America’ journal এ 2011 February মাসে, সেখানে তিনি লিখেছেন,

“An ancient Indian medical document, the Sushruta Samhita, describes a technique of using a flap from the forehead for nasal reconstruction.
The forehead flap remains the workhorse for major nasal resurfacing today. “

Skin grafting এর প্রক্রিয়া সম্পর্কে পশ্চিমা দেশ অবগত হয় অষ্টাদশ শতকে এবং তারপর হতে ধীরে ধীরে এই প্রক্রিয়া প্রচলিত হয় চিকিৎসাবিজ্ঞানে।

সুশ্রুত সংহিতা” সেখানে plastic surgery এর ধারণা আড়াই হাজার বছরের অধিকসময় পূর্বেই মহান ঋষি সুশ্রুত লিপিবদ্ধ করে গিয়েছিলেন।

অবশ্যই এটি অতি আধুনিক plastic surgery এর প্রাথমিক সোপান মাত্র কিন্তু তিনি সেই সুদূর অতীতেই চিকিৎসাবিজ্ঞানে এই পদ্ধতির প্রয়োগ ঘটিয়েছিলেন এবং নিজে কয়েক হাজার বছর পূর্বে নাকের plastic surgery করেন!

অবিশ্বাস্য মনে হলেও এটাই ঘটনা! সাম্প্রতিক গবেষণা সেই সত্যই প্রতিষ্ঠা করছে। এবিষয়ে আরেকটি প্রামান্য গবেষণাপত্র হল-

“Sushruta Father of Plastic Surgery “
এটি লেখেন M. C. Champaneria, A. Workman এবং Subhas Gupta, যেটি প্রকাশিত হয় ‘Annals of Plastic Surgery ” journal এ, 2013 এর June মাসে। গবেষণাপত্রে তাঁরা লিখছেন,

“Sushruta is considered the “Father of Plastic Surgery.”…and is responsible for the advancement of medicine in ancient India.

His teaching of anatomy, pathophysiology, and therapeutic strategies were of unparalleled luminosity, especially considering his time in the historical record.

He is notably famous for nasal reconstruction, which can be traced throughout the literature from his depiction within the
Vedic period of Hindu medicine to the era of Tagliacozzi during Renaissance Italy to modern-day surgical practices…

Sushruta’s anatomical and surgical knowledge and his creation of the cheek flap for nasal reconstruction and its transition…

The compendium documenting Sushruta’s theories about medicine… the creative approaches that still hold true today.”

তাঁদের বিশ্লেষণ করা গবেষণাপত্র হতে এটা স্পষ্ট যে, অতি প্রাচীনকালে ঋষি সুশ্রুতের চিকিৎসাপদ্ধতি এবং চিকিৎসা সম্পর্কিত তাঁর জ্ঞান ও উদ্ভাবনী ক্ষমতা ছিল অনন্য এবং অতুলনীয়, যা আজও প্রাসঙ্গিক।

এই সম্পর্কে অন্য একটি প্রামান্য গবেষণাপত্র হল-

“From ancient Indian potters to WWII pilots: The elaborate history of skin grafting”

এটি লেখেন,  Richard Jerrom, David Jackson, Anand Patel, যাঁরা  National Health Service, Nottingham, United Kingdom এর সাথে সংযুক্ত।

তাঁদের গবেষণা পত্রটি প্রকাশিত হয়, “ARTS, HISTORY, AND HUMANITIES OF DERMATOLOGY| VOLUME 72, ISSUE 5, SUPPLEMENT 1, AB26, MAY 01, 2015. তারিখে।

এই journal টি “JOURNAL OF THE AMERICAN ACADEMY OF DERMATOLOGY” এর অন্তর্গত।

তাঁরা লিখছেন,
“Skin grafts are a fundamental step on the reconstructive ladder of dermatologic surgery.
As rates of skin cancer rise, this technique is used increasingly by dermatologists.
The earliest records of reconstructive surgery can be found in the Sanskrit text Susruta Samhita.
Susruta was an Indian surgeon and physician of around 600 BC who used skin flaps brought down from the forehead to repair nasal deformities.”

তাদের গবেষণায় ঋষি সুশ্রুত ছিলেন “reconstructive surgery” এর earliest তথা প্রথমতম চিকিৎসক এবং “সুশ্রুত সংহিতা” ছিল Plastic surgery এর প্রথম চরণ।

এই বিষয়ে অন্যান্য প্রামাণ্য গবেষণাপত্রের কয়েকটি পরিচয় দেওয়া হল —

Correcting factual errors in “Sushruta: father of plastic surgery”

এই গবেষণা প্রবন্ধটি লিখেছেন M. F. Freshwater, যিনি University of Miami School of Medicine, Miami, এর সাথে সংযুক্ত।

তাঁর এই প্রবন্ধটি প্রকাশিত হয়, ‘Annals of Plast Surgery’ journal এ  2015 January মাসে।

মহান ঋষি সুশ্রুতের অপারেশন যন্ত্রপাতি
মহান ঋষি সুশ্রুতের অপারেশন যন্ত্রপাতি

এ বিষয়ে অন্য একটি গবেষণাপত্র হল –

“The nose between ethics and aesthetics: Sushruta’s legacy”

এটি লেখেন, Iva Sorta-Bilajac , যিনি Department of Social Sciences, Rijeka University School of Medicine, Rijeka, ক্রোয়েশিয়া এর সাথে যুক্ত।

এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়, ” Otolaryngol Head Neck Surgery ” Journal এ,  2007 এর November মাসে। তিনি বলছেন,

“Sushruta is considered “the father of plastic surgery,” and ancient India a cradle of rhinoplastic method called “the Indian method.”

Origin of interest in and need for rhinoplasty is deeply rooted in ancient Indian society due to the practice of nose mutilations as a form of public punishment for immoral conduct.”

 

এ সম্পর্কিত আরেকটি গবেষণা পত্র –
“The Indian method of Rhinoplasty”

এটির রচয়িতা হলেন প্রখ্যাত চিকিৎসক ও গবেষক Kayvanayvan Shokrollahi, যিনি-
Mersey Regional Burns and Plastic Surgery Unit Liverpool, Merseyside United Kingdom, এর সাথে সংযুক্ত।

এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয় “Annals of Plastic Surgery” Journal এ, 2015 January মাসে।

অপর একটি গবেষণাপত্র যেখানে মহান ঋষি সুশ্রুত কে Plastic Surgery এর ‘প্রথম পুরুষ’ বা ‘জনক’ আখ্যায় ভূষিত করা হয়েছে, সেটি হল – 

“Sushruta Samhita (Sushruta’a Collection) (800-600 B.C.?). Pioneers of plastic surgery”

এই গবেষণাপত্র টি লেখেন
D.J. Hauben, যেটি চিকিৎসাবিজ্ঞান বিষয়ক বিখ্যাত German Journal “Acta Chirurgiae Plasticae” – এ English & German দুইটি ভাষাতেই প্রকাশিত হয়।

উল্লিখিত আন্তর্জাতিক গবেষণাপত্রগুলি এবং সাম্প্রতিক কালে প্রকাশিত আরও বেশকিছু গবেষণা এটাই প্রমাণ করে যে,
Plastic Surgery -এর ‘প্রাথমিক’ ধারণা সর্বপ্রথম “সুশ্রুত সংহিতা” তেই বর্ণিত হয় এবং যিনি মানবসভ্যতায় এই শল্যচিকিৎসা প্রথম করেন, তিনি হলেন স্বয়ং মহান ঋষি সুশ্রুত।

মহান ঋষি সুশ্রুতের চিকিৎসাবিজ্ঞানে অন্যতম মহান অবদান ছিল মানবদেহের বিজ্ঞানভিত্তিক বিশ্লেষণ।
এই বিষয়ে সাম্প্রতিককালে একটি প্রামাণ্য গবেষণাপত্র হল –

“Anatomy in ancient India: a focus on the Susruta Samhita”
এটি লেখেন, Marios Loukas , Alexis Lanteri, Julie Ferrauiola, R Shane Tubbs, Goppi Maharaja,
Mohammadali Mohajel Shoja, Abhishek Yadav, Vishnu Chellapilla Rao,
যাঁরা Department of Anatomical Sciences, School of Medicine, St George’s University, Grenada, West Indies- এর সাথে যুক্ত।

গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়, Marios Loukas et al. J Anat- এ  2010 এর December মাসে।

তাঁরা বলছেন,
“The Susruta Samhita provided important surgical and anatomical information of the understanding of anatomy by Indians in the 6th century BCE.

Here we review the anatomical knowledge known to this society.”

তাঁরা তাঁদের গবেষণাপত্রে স্পষ্ট করছেন যে, মানব শরীরতত্ত্বের বিজ্ঞাননির্ভর বিশ্লেষণ অতি প্রাচীনকালেই সুশ্রুত সূচনা করেছিলেন এবং তা লিপিবদ্ধও করে গেছেন।

চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে যা একটি প্রামাণ্য দলিল এবং চিকিৎসাবিজ্ঞানের বিকাশে যার ভূমিকা অনন্য।

তিনি সেই অতি প্রাচীনকালেই চোখের সমস্যায় শল্যচিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ করেন  এবং তার অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান লিপিবদ্ধ করেন।

এ বিষয়ে একটি প্রামাণ্য গবেষণাপত্র হল–

‘Sushruta in 600 B.C. introduced extraocular expulsion of lens material’ 

এটি লেখেন Andrzej Grzybowski, যেটি প্রকাশিত হয় ‘Acta Ophthalmol’ Journal এ 2014 এর March মাসে।

তিনি বলছেন,

“It is generally accepted that Jacques Daviel introduced in the 18th century the extracapsular technique of extraction of the lens…
Present study analyses the first known cataract surgery description…

The original Sanskrit Sushruta textbook and all the available literature on the subject.

We found evidences that some sort of extraocular expulsion of lens material through a limbal puncture (paracentesis) was described by the Indian surgeon.

Nevertheless, this incision cannot be considered as a classic extracapsular procedure because it was not large enough to allow the extraction of the entire lens.”

উল্লেখিত প্রমাণে স্পষ্ট,
পশ্চিমা দেশগুলো চোখের শল্যচিকিৎসা শুরু হওয়ার প্রায় আড়াই হাজার বছর পূর্বেই ঋষি সুশ্রুত প্রথম চোখের শল্যচিকিৎসা শুরু করেন
এবং মানব সমাজ ও চিকিৎসাবিজ্ঞানের গবেষণা ও ধারাবাহিক উন্নতির স্বার্থে তাঁর উদ্ভাবনপদ্ধতি, কার্যকারিতা লিপিবদ্ধ করে যান।
 
অতএব, প্রাচীন ভরতের এই মহান শল্যচিকিৎসক সুশ্রুত কে Rhinoplastyর জনক বলা যায় নিঃসন্দেহে!
Maharishi Sushruta
সুশ্রুতের মূর্তি



অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে Royal Australasian College of Surgeons-এ আজো তাঁর মার্বেল পাথরের মূর্তি শেভা পায়।

2 thoughts on “প্রথম অপারেশন এর জনক মহর্ষি সুশ্রুত | সুশ্রুত সংহিতা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *